সম্পাদকীয়
৫ বর্ষ. ৭ সংখ্যা. ফাল্গুন ১৪১০. ফেব্রুয়ারি ২০০৪
মোড়ক খুলেই সুদৃশ্য কুপনটি ড্র করুন, জিতে নিন বাহারি পুরস্কার- জাতীয় এ কুমির সময় আর সবকিছুর মতো শিল্প-সাহিত্যকেও গিলে খেয়েছে বহু আগেই। বিজ্ঞাপনের লাটাই- সুতোয় গেঁথে নিয়েছে সকল শিল্প-মাধ্যমকে। নটকের মঞ্চে হা করে আছে ‘কোকা কোলা’র ব্যাণার। সিনেমার টিকেট, টিভি নাটক, কবিতা উৎসব, সঙ্গীত সন্ধ্যা, সাহিত্য কাগজ সবকিছুই মাল্টি-ন্যশনাল কোম্পানীর বোয়ালের হা-এর ভেতর। এ বোয়ালের হা দিন দিন বড় হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতিবোধ বিবর্জিত শিল্প চর্চা।
রাজনীতি মানুষের জীবনের প্রধান নিয়ামক গুলোর অন্যতম হলেও বাংলা সাহিত্যে সরাসরি রাজনৈতিক প্রসঙ্গ অনেকাংশেই অবহেলিত। বিশেষকরে লেখক-বুদ্ধিজীবীরা রাজনীতি থেকে সব সময় নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখেছেন। উল্লেখ করার মতো একমাত্র আখতারুজ্জামান ইলিয়াস এবং অন্যান্যদের দু’একটি লেখা ছাড়া বাংলা সাহিত্য আগাগোড়াই সচ্ছ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি বিবর্জিত। অথচ রাজনীতিকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হওয়ার কথা ছিল একটি পশ্চাতমুখী জাতিগোষ্ঠীর শিল্প-সাহিত্য।
কবিতাপত্র বরাবরই প্রগতি বা অভূত্থানমুখি চর্চার আকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখে এগিয়ে যাওয়ার পক্ষে…। গণমানুষের শিল্প-সাহিত্যের দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতিবোধের চিন্তা মাথায় রেখেই এ সংখ্যায় ‘নৈতিক বিচারের ভিত্তি: একটি মার্কসীয় পর্যালোচনা’ প্রবন্ধটি ছাপা হলো।
এ সংখ্যা হাতে পাওয়ার পরই কবিতাপত্র’র নিয়মিত পাঠক ও নিকটজনদের খটকা লাগতে পারে। পত্রিকার গত সংখ্যা প্রকাশিত হয় তার আগের সংখ্যার প্রায় এগারো মাস পরে এবং বর্তমান সংখ্যা প্রকাশিত হলো গত সংখ্যার প্রায় ষোল মাস পর। সময়ের এ দুরত্ব কমার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তাই ‘ত্রৈমাসিক’ অপবাদটি মুছে দিলাম।
০টি মন্তব্য